আপনারা অনেকেই নতুন কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য পশু পাখির খামার করে লাখ টাকা আয় করার গাইডলাইন সম্পর্কে অনেক জায়গাতে খোঁজাখুঁজি করে থাকেন। নতুন কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য পশু পাখির খামার করে লাখ টাকা আয় করার আইডিয়াটি অনেক সময় কঠিন মনে হয়ে থাকে। 

আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশাল একটি জায়গা দখল করে নিয়েছে কৃষি ও খামার উদ্যোক্তা। নতুন কিছু শুরু করতে আগ্রহী তরুণদের জন্য এটি বিরাট সুযোগ তৈরি করে। কৃষি উদ্যোক্তারা নিজেদের পরিবারের চাহিদা পূরণ করে তার পাশাপাশি আমাদের দেশের বিশাল একটি চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হচ্ছে। এটি কৃষিকাজকে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং লাভজনক ক্ষেত্র করে তোলে।

কৃষি উদ্যোক্তা মানে যে শুধু জমিতে চাষাবাদ করা এমনটা নয়। একজন কৃষি উদ্যোক্তা মানে হচ্ছে হাঁস, মুরগি ও নানান ধরনের পশুপাখি পালন বিভিন্ন ধরনের ফল, ফুল চাষ, মৎস্য চাষ, নানান ধরনের খামার করে আয়ের উৎস গড়ে তোলা বোঝায়। 

সুপ্রিয় পাঠক আশা করি ইতিমধ্যে আপনারা বুঝতে পেরেছেন আজকের আর্টিকেলটির মূল আলোচ্য বিষয় হলো নতুন কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য পশু পাখির খামার করে লাখ টাকা আয় করার গাইডলাইন। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে আজকের উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা শুরু করা যাক। নতুন কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য শুরুর দিকে বিষয়টি অনেকটাই কঠিন মনে হয় থাকে। 

তবে আমি আশা করছি এর বিস্তারিত আলোচনায় আপনাদের মনের যাবতীয় ভয় ভীতি দূর হবে। প্রথমেই আপনি কোন জিনিসটি নিয়ে শুরু করতে চাচ্ছেন সবার আগে আপনাকে সেটি নির্ধারণ করতে হবে এবং যে জিনিসটি পালন করে আপনি কৃষি উদ্যোক্তা হতে চাচ্ছে সেটি পালনের জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট একটি পরিষ্কার সুন্দর আলো বাতাস পূর্ণ প্রাকৃতিক জায়গা বেছে নিতে হবে। 

আপনি গাছপালা পশুপাখি যাই পালন করেন না কেন পালন করার আগে সেগুলোর পূর্ব ধারণা নিয়ে রাখতে হবে আপনাকে যেমন ধরুন আপনার নির্ধারণ করা পশু পাখি অথবা গাছপালার অসুখ বিসুখ রোগ বালাই বৃদ্ধির সময় কিভাবে যত্ন নিবেন কি কি খাবার দিতে হবে ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে আগাম ধারণা অবশ্যই রাখতে হবে। 

আপনি যদি এগুলো সম্পর্কে আগাম ধারনা না রাখেন তাহলে আপনি কখনোই সকল কৃষি উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারবেন না। তারপর আপনাকে শুরুর দিকে অবশ্যই অল্প কিছু দিয়ে বা অল্প পরিমাণে যেটি শুরু করতে চাচ্ছেন তা করতে হবে। প্রথমেই খুব বেশি পরিমাণে নিয়ে তা থেকে আপনি সফল হতে পারবেন না। তার জন্য আপনাকে আগে থেকে অবশ্যই আপনার নির্ধারণ কৃত পশুপাখি অথবা গাছপালার ক্রয়মূল্য ও বিক্রয় মূল্য বিভিন্ন খরচ পাতি সম্পর্কে অবশ্যই ধারণা রাখতে হবে। 

আপনি পশু পাখির খামার তৈরি করে উদ্যোক্তা হতে চাইলে সেগুলোর অবশ্যই ভালোমতো দেখভাল বা যত্ন করতে হবে। অবশ্যই পরিমাণমতো খাবারদাবার দিতে হবে। আপনার আগে যারা খামার করে সফল উদ্যোক্তা হয়েছেন তাদের কাছ থেকে সরাসরি অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন। আপনি যদি নতুন উদ্যোক্তা হয়ে পশুপাখির খামার হতে চান তাহলে আপনার জন্য কয়েকটি খামার সম্পর্কে নিচে আইডিয়া দেওয়া হল:

ময়ূর পাখির লালন পালন, গরুর খামার, গাভী পালন করে দুধ উৎপাদন, ব্রয়লার মুরগী লালন পালন করে মাংস উৎপাদন, ছাগল ভেড়া পালন করা, মুরগির ডিম উৎপাদনের খামার করা, মহিষ লালন পালন, বিভিন্ন প্রজাতির মাংস উৎপাদনের হাঁসের খামার যেমন চিনা হাঁস পাতিহাঁস রাজহাঁস বেইজিং হাঁস ইত্যাদি, ডিম উৎপাদনের জন্য হাঁসের খামার, বিভিন্ন ধরনের পাখি ও পাখির ডিম উৎপাদনের খামার যেমন কোয়েল কবুতর তিতির পাখি বিভিন্ন ধরনের বিদেশি পাখি, মৎস্য বা মাছ চাষ করা, পাশাপাশি ঝিনুক চাষ করা। 

এসব খামার থেকে আপনি অতিরিক্ত আয়ের উৎস তৈরি করতে পারবেন। যেমন গরুর বা গাভি লালন-পালন করলে সেখান থেকে আপনি গোবর সংগ্রহ করে নানান উপায়ে ব্যবহার বা বিক্রিও করতে পারবেন। পুকুর আপনার বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করলে পুকুরের পাড়ে শাক-সবজি চাষাবাদ করতে পারবেন। পুকুরের উপরে হাঁস মুরগির খামারও তৈরি করতে পারবেন। এতে করে হাঁস মুরগির বর্জ্য আপনার পুকুরে পড়বে এবং সার উৎপন্ন হবে। এভাবেই আপনার একটি খামার অনেকগুলো আয়ের উৎস হতে পারে।

নতুন কৃষি উদ্যোক্তাদের সফলতায় আমাদের প্রতিটি যুব সমাজ অনুপ্রাণিত হয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করে। প্রতিটি নতুন উদ্যোক্তা যদি পশু পাখির খামার করে লাখ টাকা আয় করতে চায় তাহলে অবশ্যই চেষ্টা ও পরিশ্রম দুটোই চালিয়ে যেতে হয়। মনে রাখবেন পরিশ্রম সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। আশা করি আমার আজকের নতুন কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য পশু পাখির খামার করে লাখ টাকা আয় করার গাইডলাইন সম্পর্কিত আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা অনেকটাই উপকৃত হয়েছেন। আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবের সাথে শেয়ার করবেন ধন্যবাদ।